আমি সবচেয়ে বেশি চিন্তিত এই কলাম-এর বীরদের ক্রমানুযায়ী সাজানো যেটা ১৯৭১-এর ১ মার্চ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপ্রকাশিত তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে পরিকল্পিত। দু'লাইন বা দু'পৃষ্ঠা, দুর্ধর্ষ অথবা শান্তিপ্রবণ যারা গণমাধ্যমে কীর্তিত নয় কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রত্যাশার উদ্দীপিত হয়ে প্রতিরোধে ও শত্রুমুক্ত করতে অকুতোভয়ে লড়াই করছে তাদের ভাষায় তাদের কথা লেখা। শহীদের সত্য ইতিহাস সংগ্রহে সতর্কতা ছিল। আমরা এখনো পর্যন্ত কোন বইয়ের লেখা তুলে ধরিনি। তবে ওয়েবসাইট ঘাটা-ঘাটি করেছি, তথ্য যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য হলে সংগ্রহ করেছি।
Protest Action at Motijheel Central Govt Boy's High School before 7th March'71
তারিখ অনুযায়ী ১ মার্চ থেকে ৬ মার্চের ঘটনা প্রথমেই আসে - প্রতিরোধে মতিঝিল সেন্ট্রাল গভঃ বয়েজ হাই স্কুল ..৭ মার্চ '৭১-এর পূৰ্বে।
প্রতিরোধে মতিঝিল সেন্ট্রাল গভঃ বয়েজ হাই স্কুল ... ৭ মার্চ '৭১-এর পূৰ্বে। প্রানপ্রিয় বঙ্গবন্ধুকে নেতা মেনে নিয়েই আমাদের ওই কর্মকান্ড। তাহলে ১ থেকে ৬ মার্চ কেন? দেশপ্রেম? আমি বলতে পারবো না, আমাদের বন্ধু অপু, দুলাল, শিবলী, ইমরোজ হয়তো গুছিয়ে বলতে পারবে। আমার ধারণা একটা চেতনা কাজ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উদয় হয়নি। ৫২ থেকে ৬৮, ৬৯ ছুঁয়ে একটা চেতনা হৃদয়ে, মস্তৃষ্কের আনাচে-কানাচে ঘুরপাক খেত ৭১-এ প্রতিরোধে মতিঝিল সেন্ট্রাল গভঃ বয়েজ হাই স্কুল ... ৭ মার্চ ''৭১-এর পূৰ্বে। প্রানপ্রিয় বঙ্গবন্ধুকে নেতা মেনে নিয়েই আমাদের ওই কর্মকান্ড। তাহলে ১ থেকে ৬ মার্চ কেন? দেশপ্রেম? আমি বলতে পারবো না, আমাদের বন্ধু অপু, দুলাল, শিবলী, ইমরোজ হয়তো গুছিয়ে বলতে পারবে। আমার ধারণা একটা চেতনা কাজ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উদয় হয়নি। ৫২ থেকে ৬৮, ৬৯ ছুঁয়ে একটা চেতনা হৃদয়ে, মস্তৃষ্কের আনাচে-কানাচে ঘুরপাক খেত ৭১-এ এসে বিস্ফোরিত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রত্যাশার চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্দালয়ে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হয়, আমরা সব বন্ধু সেখানে ছিলাম, মিছিলের শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার স্বপক্ষে দাবি ও প্রতিবাদী হয়েছিলাম। সেই রাতেই ৬ জন একত্রিত হয়ে প্রতিরোধে শপথ নিয়ে অভিযানে অংশ নিয়ে সফল হয়েছিলাম। কিন্তু ৪৬ বছর কাউকেই ঘটনা খুলে বলা হয়নি। আমার ভুল থাকতে পারে।ক্ষমা চাই অগ্রিম।
Freedom Fighter Commander Nazmul Kabir of Ramna Thana zone 1971-Forgotten Hero of Bangladesh Liberation war
৭১এর রক্ত রেখা 1971 martyrs Bloodlines and forgotten heroes of Bangladesh Liberation War
Mass Grave of 9 martyrs-Bangladesh Liberation War, Sabujbag, Halishahar, Chittagong
01.GOOGLE MAP-Grave of 9 martyrs of Bangladesh Liberation War-Sabujbag-Halishahar-Chittagong
02.Grave of 9 martyrs of Bangladesh Liberation War-Sabujbag-Halishahar-Chittagong
03.Grave of 9 martyrs of Bangladesh Liberation War-Sabujbag-Halishahar-Chittagong
04.Mohammad Rahim Ullah-only survived man of 19 April mass killing in Sabujbag. Ctg
05.Mohammad Rahim Ullah-only survived man of 19 April mass killing in Sabujbag-Ctg.
06.Mohammad Rahim Ullah-only survived man of 19 April mass killing in Sabujbag-Ctg
07.Mohammad Hyder-Fish Merchant-Sabujbag-Ctg-who helped me finding Md. Rahim Ullah
08. Old Bazar in I-block-Md. Rahi Ullah standing infront of his Tea stall where 9 young men were captured and taken to Master Bari and brutally killed by armed Bihari blood hungry butchers-memory of 1971
09.Master Bari where 9 young men were brutally killed by Bihari blood hungry butchers
10.Master Bari where 9 young men were brutally killed by Bihari armed blood hungry butchers
Mass Grave of 9 martyrs-Bangladesh Liberation War, Sabujbag, Halishahar, Chittagong
নভেম্বর ২৮, সকাল ৯টা, আকস্মিক ভাবে পেয়ে গেলাম সবুজবাগ গণসমাধির ৯ জন শহীদ যুবকের সঙ্গী বেঁচে যাওয়া মোহাম্মদ রহিম উল্লাহর সন্ধান। দেখা পেলাম সবুজবাগের মৎস্য ব্যাবসায়ী হায়দার ভাইয়ের। আমার পরিচিত। ২ মাস ধরে খুঁজছি গণহত্যার প্রত্যক্ষ সাক্ষী। অনেকের সঙ্গেই কথা হয়েছে, আমি সন্তুষ্ট হইনি। হায়দার ভাইকে একটু দূরে ডেকে নিয়ে বিহারীদের নৃশংশ হত্যাযজ্ঞের ঘটনা জানতে চাইলাম। বললেন, বাজারে সেও ছিল, বয়স তখন ৯-১০, বিহারীরা রাইফেল নিয়ে বাজারে হানা দিতেই সে পালিয়েছিলো। তবে একজন এখনো জীবিত আছে, সে মোহাম্মদ রহিম উল্লাহ, তার বাড়ী সবুজবাগ। আমাদের গ্রীন ভিউতে (Green View) কেয়ার টেকারের কাজ করে।
দুপুরে খুঁজতে বের হলাম।একজন সাহায্য করলো। তার ঝুপড়ি ঘরের একটু দূর থেকে ডেকে বাসা থেকে বের করলেন মোহাম্মদ রহিম উল্লাহকে। কর্মক্ষম সুঠামদেহী। দেখে ভালো লাগলো।বালুর বস্তার ধাপ বেয়ে ৫ফুট উঁচু দেয়াল টপকাতে হলো। বাইরে একটা চৌকি পাতা। বসলাম। কথা শুরু হলো।
রহিম উল্লাহ ভাই যা বললেন:
৩১ মার্চ EPR (BDR) ক্যাম্প পাকিদের দখলে চলে চলে যাবার পর ফেলে যাওয়া অস্ত্র বিহারীদের হাতে চলে যায়। বিহারীদের জন্মসূত্রে পাওয়া পশু প্রবৃত্তি জেগে উঠে এবং ক্যাম্পের আসে পাশের গ্রাম-লোকালয়ে অত্যাচার চালাতে থাকে। ২৫শে মার্চের আগে EPR ক্যাম্প-এর চারপাশে হিন্দু, মুসলমান, বিহারি পাশাপাশি থাকতো। নাথ পাড়া বিশাল এলাকা, হিন্দু অধ্যুষিত। সবুজবাগ মগপাড়া সহ আরো কিছু এলাকায় মুসলমানদের সঙ্গে হিন্দুদের সহঅবস্থান ছিল, এটা আমার ধারণা।
সবুজবাগের গন্যমান্য বয়োজোষ্ঠগণ আলোচনার মাদ্ধমে ঠিক করলেন, যদি আই-ব্লকের কাছেই ছোট্ট বাজার, চা দোকান করা যায় তাহলে উন্মাদ বিহারীরা কোনো কিছুর খোঁজে সবুজবাগে ঢুকবে না।
দুর্ভাগ্য: ১৯ এপ্রিল সোমবার, দুপুর ১ টার কাছাকাছি সময় হটাৎ বিহারীরা রাইফেল হাতে আই-ব্লকের ছোট্ট বাজার ঘিরেই এলোপাথাড়ি আক্রমণ শুরু করলো। রহিম উল্লাহ ভাইদের একটা চা দোকান ছিল। দোকানের সামনে লম্বা টুলে ৪ জন বসা। বিহারীদের বাজারে ঢুকতে দেখেই মুজাফ্ফর দ্রুত সামনের দোকানে লুকিয়ে যায় কিন্তু বিহারীদের চোখ এড়াতে পারেনি। রহিম উল্লাহ ভাইয়ের বুকে রাইফেল ধরে উর্দুতে জানতে চাইলো মুজাফ্ফর কোথায়? একটু আগেই এখানে বসা ছিল। মুজাফ্ফর ধরা পড়লো, মোট ৮ জন। সবাইকে মাটিতে ফেলে রাইফেলের বাট দিয়ে মারতে লাগলো সঙ্গে অশ্লীল গালি। অন্য জায়গায় হত্যা করা হবে, দড়ি খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো দলটা। এইফাঁকে রহিম উল্লাহ ভাই পেছনেই তাঁদের চা দোকানে ঢুকে পরে বড় লাকড়ির চুলার পেছনে লুকিয়ে চুলায় অনেক লাকড়ি আর ফেলেদেয়া চাপাতা দিয়ে আগুন অনেক বাড়িয়ে দিলো। যেখানে লুকিয়ে ছিল সেটা ছিল লাল পিঁপড়ে ভরা। সারা শরীর লাল পিঁপড়েতে ছেঁয়ে কামড়াতে শুরু করলো। দোকানে ঢুকে রহিম উল্লাহ ভাইকে খুঁজলো। পেলো না। যাবার সময় ৫ সের চিনির ব্যাগ নিয়েছিল। ৮ জনকে বেঁধে নিয়ে যাবার সময় মৌলানা আব্দুস সামাদের বড় ছেলে আব্দুস সাত্তারকে বেঁধে নিয়ে গেলো। শহীদ ৯ জনের মধ্যে একমাত্র আব্দুস সাত্তার বিবাহিত এবং ৩ পুত্র সন্তানের জনক। রহিম উল্লাহ ভাই চা দোকানে লুকিয়ে থেকেই ৯ টা গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন।
বিহারীর দল চলে যাবার পর পাড়ার সবাই যখন স্বজনদের খুঁজতে আসলো, পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনে রহিম উল্লাহ ভাই বেরিয়ে এসে বাড়ীতে পৌঁছে দেখেন কান্নার রোল, সবাই জেনে গিয়েছিলো রহিম উল্লাহ নিহত হয়েছেন। জীবিত ফিরতে দেখেই তখনি সবাই মগপাড়া চলে যায় বোনের বাড়িতে। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত শ্রমিকের কাজ, রিকশা চালিয়ে সংসার টিকিয়ে রেখেছিলেন।
১৬ ডিসেম্বর রহিম উল্লাহ ভাই সহ মাস্টার বাড়ীতে অনেক আগেই পুড়িয়ে দেয়া এক হিন্দু বাড়ী থেকে মাথার খুলি এবং দেহের হাড় সংগ্রহ করে সবুজবাগ কবরস্থানে দাফন করে। নিকটতম আত্মীয়-স্বজন আলাদাভাবে সবাইকে শনাক্ত করতে পারে। সেই পোড়া বাড়ীতে একজন একজন করে ঢুকিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করে মেরে দেহ লাথি দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বিহারীরা লাশের উপর মাটির দেয়াল ভেঙে চাপা দিয়ে চলে যায়।
৩১ নভেম্বর ২০১৭ আমি বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সবুজবাগ, আই-ব্লক, কালী মন্দির, মধ্যে নাথপাড়া তন্ন-তন্ন করে খুজলাম যখানে ৯ জনকে গুলিকরে হত্যা করা হয় সেই জায়গা। পেলাম না। রাতে রহিম উল্লাহ ভাইকে ফোন করে ব্যর্থতার কথা বললাম। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ সকালে রহিম উল্লাহ ভাই সহ বের হলাম। প্রথমে গেলাম মাস্টার বাড়ী। ৪৬ বছর আগের স্মৃতি ধরে রাখার প্রয়োজন মনে করে নি। সেখান থেকে সেই ছোট বাজার যার চিহ্নমাত্রও নেই, শুধু উঁচু বিল্ডিং। তবুও চা দোকানের স্থান শনাক্ত করলেন। আমরা ফিরে এলাম।
||| ধন্যবাদ #যোদ্ধা ||| সম্মিলিত সামাজিক সংগঠন পরিষদ এর নিবন্ধিত সংগঠন #যোদ্ধা আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারন করছেন ১৯ এপ্রিল ১৯৭১ এ হালিশহরস্থ সবুজবাগে সংগঠিত গনহত্যা থেকে বেচেঁ যাওয়া একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী জনাব রাহিম উল্লাহ।
রাহিম উল্লাহ সাহেবকে তাঁর জীবনের প্রথম সম্মাননা তাঁকে অবিভুত করেছে। আমি নিজেও কৃতজ্ঞ। ভুলবোনা #যোদ্ধা র এই প্রয়াস।